কাঁটাতারে ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক: জয়নুল আবদীন ফারুক

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। এই ছবি শুধু ফেলানীর লাশের ছবি নয়, এই ছবি কাঁটাতারে বিদ্ধ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব। এই ছবি নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতিকদের ভারত তোষণনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেলানী হত্যা দিবসে সীমান্ত আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি দাবি করি, তা না হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে না। বাংলাদেশের নাগরিকদের বিএসএফ বিনাবিচারে হত্যা করে, যা অমানবিক। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্ত্র হাতে ভারতীয় বিএসএফ বারবার ঢুকে পড়ে, যা আমাদের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, স্বাধীনতার লঙ্ঘন। ভারতের সঙ্গে চীন, মিয়ানমার, নেপালা, ভুটান, পাকিস্তানের পারস্পরিক সীমান্ত থাকলেও শুধু বাংলাদেশ সীমান্তে তারা অমানবিকভাবে সীমান্ত হত্যা করে। যা খুবই দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।
কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী সীমান্তে বিনা উস্কানিতে বিএসএফ বাবার সামনে শিশু কন্যা ফেলানীকে হত্যাসহ সারা বছর সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের হাতে নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যার উদ্বেগ জানিয়ে জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, এই ঘটনা ভারতের আগ্রাসী চরিত্র। ভারতকে সীমান্ত আগ্রাসন, বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ভারত তোষণনীতির কারণেই সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ভারত সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে পতিত আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনে মনে হতো, তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী নয়, তারা ভারতীয় জনপ্রতিনিধি।
ইরান আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বিগত সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সীমান্তে বাংলাদেশি জনগণ স্বাধীন ভূখণ্ডে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও কৃষিকাজ করতে পারছে না। ৭ জানুয়ারি ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা। শহীদ ফেলানী দিবসে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, খুলনা মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ একেএম সাইফুদ্দোহা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রহমান খোকন, মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী, তরুণ দলের সিনিয়র সহসভাপতি টি এইচ তোফা, গণফোরাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, লেবার পার্টির প্রচার সম্পাদক মো. মনির হোসেন, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, দপ্তর সম্পাদক মো. মিরাজ খান, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমেদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সহসভাপতি মাসুদ আলম পাটোয়ারী, ডা. ইউসুফ আলী, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও মহানগর আহবায়ক রায়হান উদ্দিন সনি প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে নির্মম হত্যার শিকার বাংলাদেশের ফেলানীর হত্যা দিবস ৭ জানুয়ারিকে জাতীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালন ও ভারতীয় দূতাবাসের সড়কের নাম ‘ফেলানী সড়ক’ নামকরণের দাবি জানান।