সাবেক এমপি বেনজিরের ফ্ল্যাট ও জমি জব্দ, বিনিয়োগ অবরুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৫:১০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদের রাজধানীর ইস্কাটন, ধানমন্ডি ও ঢাকার ধামরাইয়ের চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এছাড়া পূর্বাঞ্চলের ১০ কাঠার একটি প্লটসহ মোট ১৯৩ শতাংশ জমি জব্দের আদেশ দেয়া হয়েছে। তার নামে থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, একটি মোটরযান ও নয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৫ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদক জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক তানজিল আহমেদ এসব তথ্য জানান।
বেনজিরের স্ত্রী সাহিনা বেগমের একটি কোম্পানির শেয়ার, একটি ডিপোজিট ও দুইটি ব্যাংক হিসাবের ১ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৩ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সাবেক এমপির জব্দ সম্পদের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ২৮০ টাকা। শেয়ার, মোটরযান ও ৯ ব্যাংক হিসাবে আছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৮৬ টাকা।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৯৬১ টাকা মূল্যর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে করেছেন।
তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামীয় ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা জমা এবং ৪১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৮৪ কোটি ৪২ লাখ ৮ হাজার ২৫৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এরপর তিনি মানি লন্ডারিংয়ে সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ প্রদানের মাধ্যমে ওই অর্থ বা সম্পত্তি স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। এ কারণে সাবেক এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
আবেদনে আরো বলা হয়, মামলার তদন্তকালে তথ্য পাওয়া যায়, আসামী বেনজির আহমেদ অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। এজন্য তার নিজ নামীয় ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
স্ত্রী সাহিনার বিষয়ে বলা হয়, সাহিনা আহমেদ ও বেনজীর আহমেদ অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে অসাধু উপায়ে এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলাটি তদন্তকালে তথ্য পাওয়া যায়, আসামি অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। এ কারণে আসামির নিজ নামীয় ব্যাংক হিসাবসহ অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। তার ব্যাংক হিসাবসহ অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা না গেলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।