দিল্লিতে হাইকমিশনে বিক্ষোভ: ভারতের ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান ঢাকার
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ব্যাখ্যা ও প্রেসনোট পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক এলাকার এত ভেতরে কীভাবে বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করল—তা একটি গুরুতর প্রশ্ন এবং এ ঘটনায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়েই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে হামলা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনায় ভারতের দেওয়া প্রেসনোট গ্রহণযোগ্য নয়। কূটনৈতিক এলাকায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। বাংলাদেশ হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার যে চেষ্টা হয়েছে, তা নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের আকার ছোট করার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।
আরো পড়ুন : দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হুমকি
অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ ঘটনার ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে।
রণধীর জয়সওয়াল জানান, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন তরুণ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়ে ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানায় এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে স্লোগান দেয়। তার দাবি অনুযায়ী, কোনো পর্যায়েই হাইকমিশনের নিরাপত্তা বেষ্টনি ভাঙার চেষ্টা হয়নি বা নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং এ সংক্রান্ত দৃশ্যমান প্রমাণ জনসমক্ষে রয়েছে।
ভারতের সরকারি মুখপাত্র আরো জানান, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ভারতের ভূখণ্ডে অবস্থিত সব বিদেশি কূটনৈতিক মিশন ও স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির ওপর ভারত নিবিড়ভাবে নজর রাখছে উল্লেখ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারতীয় কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারতের গভীর উদ্বেগ ঢাকা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত আনুমানিক ৯টার দিকে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাঙ্গণে একদল উগ্র হিন্দু বিক্ষোভকারী জড়ো হয়। তারা সব নিরাপত্তা বেষ্টনি অতিক্রম করে বাংলাদেশ হাউসের মূল ফটকের সামনে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশবিরোধী নানা স্লোগান দেয় এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে হত্যার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।
