লোকসান কাটিয়ে আগাম আলুতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নীলফামারীর কৃষকদের

মো. রাজীব চৌধুরী রাজু, নীলফামারী থেকে
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২২ পিএম

আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ছবি : ভোরের কাগজ
গত দুই বছরের আলু চাষের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেননি নীলফামারীর ছয় উপজেলার কৃষকেরা। তবে চলতি মৌসুমে আগাম জাতের আলু চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় নতুন স্বপ্ন বুনছেন তাঁরা।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরাই প্রতিবছর দেশের মধ্যে প্রথম আগাম আলু চাষ শুরু করেন। এবারে বাজারে আলুর দর অনিশ্চিত হলেও ঝুঁকি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার পানিয়ালপুকুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ জানান, গত দুই বছর ধরে আলু চাষ করে শুধু লোকসান গুনছি। বুক বেঁধে এবার ১৫ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। ফলন ভালো হলে আশা করি ভালো দাম পাওয়া যাবে।
একই গ্রামের কৃষক নিয়ামত উল্লাহ বলেন, এই স্বল্পমেয়াদী আলু জাত আমাদের কয়েক বছর ধরে দ্বিগুণ লাভ দিয়েছিল। কিন্তু গত দুই বছর লোকসানে পড়তে হয়েছে। তবুও এ বছর ঝুঁকি নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছি।
আরো পড়ুন : রোববার থেকে সচিবালয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
কালিকাপুর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান লুতু জানান, হিমাগারে প্রায় আড়াই হাজার বস্তা আলু রেখেছিলাম। সেখান থেকে ৭০০ বস্তা বীজ এনে ১৩ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছি। খরচ মেটাতে কেজি প্রতি ৩০ টাকা দর লাগলেও, চাহিদা না থাকায় ১৮–২০ টাকায় বীজ বিক্রি করতে হয়েছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর রহমান বলেন, জেলার ছয়টি উপজেলা ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর ও সদর উপজেলায় প্রতি বছর আগাম আলু চাষ হয়। গত দুই বছর বাজারমূল্য কম থাকায় কৃষকরা লোকসানে পড়েছেন। এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে, এখন পর্যন্ত ৮ হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছে। প্রতিবছরই চাষের পরিমাণ বাড়ছে।
স্থানীয়ভাবে আলু উৎপাদনের জন্য পরিচিত কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে মৌসুমের শুরুতেই আলু রপ্তানি হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বড় বাজারে। কৃষকেরা আশা করছেন, চলতি মৌসুমে ভালো দাম পেলে গত দুই বছরের লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তাঁরা।