শুভ বড়দিন আজ
বর্ণিল আয়োজন বিশেষ নিরাপত্তা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস উড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ডিএমপি। ছবি : সংগৃহীত
বড়দিন বা মেরি ক্রিসমাস আজ বুধবার। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। দুই হাজার বছর আগে এদিনেই বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে মাতা মেরির কোলে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে যিশুর জন্ম হয়। ‘ঈশ্বরের আগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতা’য় মা মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, বাংলায় বলা হয় ‘যিশু’। যিনি বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনান।
আজ গির্জায় গির্জায় হবে প্রার্থনা। মানবতার কল্যাণে যিশুখ্রিস্টের শান্তির বাণী ছড়িয়ে যাবে মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজের উপহারে মেতে উঠবে শিশুরা। সারা বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের মতো বাংলাদেশেও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হবে দিনটি। বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলের সেন্ট মেরিস গির্জা, তেজগাঁওয়ের হলি রোজারি গির্জা ও আসাদগেটের সেন্ট ক্রিস্টিনা গির্জার মতো দেশের সব গির্জা সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। ফুল, নানা রঙের বেলুন, নকশা করা কাগজ ও জরি ব্যবহার করে কয়েক দিন ধরেই সাজানো হচ্ছিল গির্জাগুলো। তা দেখতে অনেকে ভিড় করছেন গির্জাগুলোতে।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা আজ সারা দিন আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করবেন। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন।
আজ সকালে গির্জাগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে শুরু হবে বড় দিনের আয়োজন। গির্জায় ধর্মীয় গান হবে। এছাড়া নানা আয়োজন করেছেন যিশুভক্তরা। গতকাল মঙ্গলবারই ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। যিশু গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মেলবন্ধনের এদিনে অনেকে বেড়াতে যাবেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। বড়দিনের উৎসব ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনে পিছিয়ে নেই ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরের অভিজাত হোটেলগুলো। রঙিন বাতি, ফুল আর প্রতীকী ক্রিসমাস ট্রিতে সাজানো হয়েছে বড়দিন। দিবসটি উপলক্ষে খিস্ট্রান সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ. ইউনূস। আজ সরকারি ছুটির দিন। সংবাদপত্রগুলো দিনটিতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, সরকারি-বেসরকারি টিভি ও রেডিওতে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল সকালে কাকরাইলে সেন্ট মেরী’স ক্যাথেড্রাল চার্চে বড়দিনের নিরাপত্তা মহড়া পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদ করিম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নগরীর প্রতিটি চার্চে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া এই উৎসবকে ঘিরে সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল টিমসহ স্পেশালাইজড ইউনিটগুলো দায়িত্ব পালন করবে। বর্তমানে সেনাবাহিনী আমাদের সঙ্গে আছে। তারাও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। সবার সহযোগিতায় অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপন হবে।
এছাড়া মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস উড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ডিএমপি। গতকাল এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।