অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মাঝেও গ্রামীণফোনের আয় বৃদ্ধি, গ্রাহক ৮ কোটি ৫৬ লাখ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
গ্রামীণফোন
সার্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে মোট ৪,০১০ কোটি টাকা আয় করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৪% বেশি। এই প্রান্তিক শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৫৬ লাখে। বর্তমানে মোট গ্রাহকের ৫৯.৮% অর্থাৎ ৫ কোটি ১২ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, “বছরের শুরুতে আমাদের একটি দৃঢ় অঙ্গীকার ছিল- আমরা দায়িত্বশীলভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করব এবং খরচের দক্ষতা বজায় রাখব। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমরা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। আমাদের কার্যকর দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা শক্তিশালী ইবিআইটিডিএ প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রেখেও আমরা যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি এটি তারই প্রতিফলন। গত কয়েক বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে কাজ করে যাচ্ছি। কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (সিপিপিএ) কাঠামো অনুমোদিত হওয়ার মাধ্যমে সেই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তব রূপ নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা আশাবাদ এবং অন্তর্নিহিত চ্যালেঞ্জের একটি মিশ্র চিত্র দেখতে পাচ্ছি। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের অর্থনীতি সাময়িকভাবে গতি পেতে পারে, কারণ বাজারের সামগ্রিক কার্যক্রমে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই নতুন গ্রাহক অর্জনের প্রত্যাশা রয়েছে আমাদের এবং দেশের সার্বিক কানেক্টিভিটিতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আরও সুদৃঢ় করতে চাই। প্রতি প্রান্তিকে আমরা প্রযুক্তি, পণ্যের অফার, ডিজিটাল অপারেশন এবং গ্রাহক সম্পৃক্ততায় নতুনত্ব আনছি, যাতে দ্রুত পরিবর্তনশীল বাজারে প্রাসঙ্গিক ও অগ্রণী থাকতে পারি। আমরা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে ভবিষ্যতের পথে এগোচ্ছি এবং সেই ভবিষ্যৎ হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-নির্ভর। ধাপে ধাপে ফাইভজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমরা নেটওয়ার্ক অপারেশন, গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা উন্নয়নে এআই-চালিত উদ্যোগে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি

গ্রামীণফোনের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) অটো মাগনে রিসব্যাক বলেন, “সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো স্থবির এবং বাজারজুড়ে প্রবৃদ্ধি আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় ধীর। তবুও এ প্রান্তিকে আমাদের আর্থিক ফলাফল আশাব্যঞ্জক। স্থিতিশীল মুনাফার হার এবং মূল ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলোতে কঠোর শৃঙ্খলার মাধ্যমে আমরা পুনরায় প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছি। আয়ের ক্ষেত্রে বলতে পারি, টানা চার প্রান্তিকের পতনের পর এবার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমাদের আয় ৫৬.১ কোটি বা ১.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রান্তিকে আমাদের ব্যয় মাত্র ১% বেড়েছে, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি এখনো ৮%-এর বেশি। এ প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ ১.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আয়ের প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি। এটি আমাদের কার্যকর পরিচালন দক্ষতা ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণের প্রতিফলন। যদিও উচ্চতর অবচয় ও এমোর্টাইজেশন খরচ এবং নতুন সাইট স্থাপন ও ছাদের লিজ বাবদ খরচ বৃদ্ধির কারণে মোট কর পরবর্তী মুনাফা (এনপিএটি) কিছুটা প্রভাবিত হয়েছে; তবুও আমাদের এনপিএটি মার্জিন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে- ১৮.৭%। আমরা বিশ্বাস করি, এটা সেই সময় যখন একটি বাস্তবসম্মত ও ভবিষ্যৎ-উপযোগী অপারেটিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা উচিত। যে প্ল্যাটফর্মের ভিত্তি হবে ক্লাউড-নেটিভ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। এগুলো দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ এবং স্বল্পমেয়াদে প্রভাব সীমিত হলেও আমরা আশা করি প্রবৃদ্ধি পুনরায় গতি পাওয়ার সাথে সাথে কাঠামোগত সুবিধাগুলোও আরও লক্ষণীয় হয়ে উঠবে।”
