ভেনেজুয়েলার আশপাশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আঞ্চলিক উত্তেজনা তীব্র হচ্ছে। তবে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ পদক্ষেপের লক্ষ্য সরকার পরিবর্তন নয়, বরং মাদক চোরাচালান দমন অভিযান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই।

শনিবার (১ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে আটটি নৌবাহিনীর জাহাজ মোতায়েন করেছে। পুয়ের্তোরিকোতে পাঠানো হয়েছে এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান, যা রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম। পাশাপাশি অঞ্চলটির দিকে রওনা দিয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরীর স্ট্রাইক গ্রুপ।

এই বিপুল সামরিক মোতায়েনের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী এয়ার ফোর্স ওয়ান-এ থাকা এক সাংবাদিক জানতে চান, আপনি কি ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছেন? জবাবে ট্রাম্প সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, “না।”

এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও একই বার্তা দিয়েছেন। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, মিয়ামি হেরাল্ডের তথাকথিত সূত্র ভুয়া খবর ছড়িয়েছে, ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এটি সত্য নয়।”

গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চল ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক চোরাচালানবিরোধী অভিযান শুরু করে। ওয়াশিংটনের তথ্যমতে, ওই অভিযানে ৬২ জন নিহত, ১৪টি নৌযান ও একটি আধা–ডুবোজাহাজ ধ্বংস করা হয়েছে।

আরো পড়ুন : কানাডার সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনা করবে না যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই ছোট নৌযানগুলো তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব অভিযান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শামিল, এমনকি লক্ষ্যবস্তু সত্যিই অপরাধী হলেও।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বি–৫২ ও বি–১বি মডেলের বোমারু বিমান সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি টহল দিয়েছে। সর্বশেষ সোমবার ওই বিমানগুলোকে অঞ্চলে উড়তে দেখা গেছে। এতে আঞ্চলিক উত্তেজনা আরো বেড়েছে।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, ওয়াশিংটন আমাদের সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে এবং কৃত্রিম যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করছে। মাদুরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক উপস্থিতি শুধুই মাদকবিরোধী অভিযান নয়; বরং এটি কারাকাসে সরকার পরিবর্তনের প্রস্তুতি।