মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় চুরি ও খুনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, পরকীয়া, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও অভিমান করে বেশিরভাগ আত্মহত্যার এমন ঘটনা ঘটছে। রোধকল্পে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছেন তারা। 

থানা-পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ১৬ জানুয়ারি উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪০) নামের এক মানসিক রোগী নিজ বাড়িতে টিনের ঘরের আঁড়ার সঙ্গে রুমাল গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। 

১৫ জানুয়ারি সদর ইউনিয়নের চর আজিমপুর গ্রামের খায়রুন নাহার (১৬) বাবার বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে রাগারাগির পর ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে । 

৯ জানুয়ারি দক্ষিণ ধল্লা গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৪) প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে।  এক পর্যায়ে অভিমান করে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় রশি লাগিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। 

৮ জানুয়ারি দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামের নানা শাজাহান ফকিরের বাড়িতে ঝগড়া করে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। একই দিন জামির্ত্তা ইউনিয়নের ডাউটিয়া গ্রামের মোহর আলী রাশেদ (২১) প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে নিজ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে মায়ের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে । 

৭ জানুয়ারি তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা উত্তর পাড়া গ্রামের (কলাবাগান) সুমাইয়া (১৬) স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে । 

৬ জানুয়ারি বায়রা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া গ্রামে মোছা: সাহিদা (২০) স্বামী সুজনের সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। 

১ জানুয়ারি সদর ইউনিয়নের চর আজিমপুর গ্রামের শাকিলের স্ত্রী মোছা: জয়া (১৮) স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে । 

একের পর এক এসব আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকাবাসী রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় । প্রশাসনকে বিভিন্ন কর্মসূচির গ্রহণ করে সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিজ্ঞ মহল। 

থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, প্রত্যেকটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। 

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আত্মহত্যার ঘটনাগুলোতে সত্যি আমরা মর্মাহত। ইউনিয়ন ও প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক উঠান বৈঠক ও সচেতনতা মূলক সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেব।