শেখ হাসিনা ও কামালসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
মুশফিকুর রহমান আবির নামে এক বিএনপি কর্মীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী মুশফিকুর রহমান আবির। আদালত পল্টন থানাকে মামলার এজাহার গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। এদিন আদালতের পেশকার শিশির হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এমপি শফিউল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এবং সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রচারণা শুরু হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কলাবাগান এলাকায় প্রচারণা চলতে থাকে। মামলার বাদী প্রচারণা শেষে বাসায় ফেরার পথে কলাবাগান লেক সার্কাস ১ নম্বর রোডের মাথা থেকে আসামিরা বাদীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে এলোপাথাড়ি চড়, থাপ্পড়, কিল ঘুষি মারা শুরু করলে বাদী বেহুঁশ হয়ে পড়েন।
এরপর বাদীকে হাজারিবাগের একটি ট্যানারি গোডাউনে আটকে রেখে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর বাদীর পিতার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে নেয় এবং পরের দিন ৫ ডিসেম্বর সকালে বাদীকে তারা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে বাদী জানতে পারেন তারা ছিল মেয়র তাপসের সন্ত্রাসী বাহিনী।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নয়াপল্টন স্লোগানে মুখোরিত হয়ে উঠতে থাকে এবং সেখানে বাদী যোগ দেয়। সমাবেশকে পণ্ড করতে ওইদিন হঠাৎ হামলা শুরু করে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও অন্যান্য সহযোগীরা। সমাবেশ স্থলে সরাসরি গুলি টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু হয়।
সাধারণ নেতা কর্মীরা দিশেহারা হয়ে ছুটাছুটি শুরু করে। বাদী সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে একই বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কলাবাগানে নিজ বাসায় ফিরে আসেন। একদিন পরেই স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বোচ্ছাসেবক লীগের সন্ত্রাসীরাসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাদীর বাসায় ভাঙচুর, লুটপাট করে এবং তার অসুস্থ শরীরে অমানবিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে বাদী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী নিজেকে কলাবাগান থানা হাজতে দেখতে পান।
সেদিন রাতেই বাদীর বাবার সঙ্গে তখনকার দায়িত্বরত ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কথা বলেন এবং বাদীর বাবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। একই সঙ্গে নানান রকম হুমকি দেয়। পরের দিন কোর্টে চালান করার পর রিমান্ডে চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ২২ দিন অসুস্থ শরীরে জেল খেটে জামিন পান বাদী।