জুলাই–আগস্ট আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যাসহ আটটি অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জাসদ সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (৭ ডিসেম্বর)।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেলে এ সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হবে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আজ দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২ ডিসেম্বর এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহাকে জেরা করা হয়। এর আগের দিন ১ ডিসেম্বর তিনি সাক্ষ্য দেন। এর আগে প্রথম সাক্ষী মো. রাইসুল হক জবানবন্দিতে জানান, জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নির্দেশনা ও উসকানিতে ইনু জড়িত ছিলেন। সেই হামলায় ছয়জন নিহত হন এবং তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। নিহতদের জন্য তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে ইনুর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

আরো পড়ুন : শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ

গত ৩০ নভেম্বর মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একই দিন ইনুর অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি খারিজ করেন। এর আগে, গত ২ নভেম্বর ইনুর বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ইনু।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে প্রসিকিউশন জানায়, রাজনৈতিক অবস্থান তাঁর বিরুদ্ধে দায় এড়ানোর সুযোগ দেয় না। গত ২৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

এর আগে চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশন জুলাই–আগস্টে গণহত্যায় সহযোগিতাসহ আটটি অভিযোগ দাখিল করে। সব অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেন। গত বছরের ২৬ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা থেকে ইনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন। একসময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও সাম্প্রতিক নির্বাচনে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি।

জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ নিহত হন। বহু মানুষ আহত হন। এসব ঘটনার তদন্ত শেষে প্রসিকিউশন ইনুর বিরুদ্ধে উসকানি ও ষড়যন্ত্রসহ আটটি অভিযোগ আনে। ২০ জন সাক্ষী, তিনটি অডিও এবং ছয়টি ভিডিও প্রমাণ হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে।