ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার আহ্বান ট্রাম্পের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৩ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতায় যাওয়া, কারণ “রাশিয়া একটি বিশাল শক্তি, আর তারা (ইউক্রেন) তা নয়।” শুক্রবার আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে জানিয়েছেন, পুতিন যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছেন যদি কিয়েভ পুরো দোনেৎস্ক অঞ্চল ছেড়ে দেয়। তবে জেলেনস্কি এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে দোনেৎস্কের বেশিরভাগ অংশ অন্তর্ভুক্ত।
ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে কেবল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নয়, বরং স্থায়ী শান্তিচুক্তি প্রয়োজন। সবাই মেনে নিয়েছে, ভয়াবহ এই যুদ্ধ থামানোর একমাত্র উপায় একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি, কারণ যুদ্ধবিরতি বেশিদিন টেকে না।
আরো পড়ুন : ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে অর্জন কী
অন্যদিকে জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার অনিচ্ছার কারণেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞ থামানোই যুদ্ধ থামানোর মূল শর্ত।
আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এই বৈঠক অনেকের মনে করিয়ে দিচ্ছে গত ফেব্রুয়ারির ঘটনাকে, যখন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে সমালোচনা করেছিলেন। এবারও ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে তিন পক্ষের বৈঠকের উদ্যোগ নিতে পারেন।
ইউরোপীয় মিত্ররা ট্রাম্পের মধ্যস্থতাকে স্বাগত জানালেও, তারা ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ভাডেফুল জানিয়েছেন, সোমবারের বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারাও অংশ নিতে পারেন।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরু করে এবং ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত, যেখানে হাজারো মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ও পুতিন ভূখণ্ড হস্তান্তর ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং “মূলত একমত” হয়েছেন। তার ভাষায়, “আমরা সমঝোতার কাছাকাছি, তবে ইউক্রেনকে এতে রাজি হতে হবে।”
প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কির সমঝোতায় যাওয়া উচিত, কারণ “রাশিয়া বড় শক্তি, আর ইউক্রেন তা নয়।”
তবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ইউক্রেন কোনো ভূখণ্ড ছাড়বে না। দোনেৎস্কের স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্ক শহরগুলোকে তিনি রাশিয়ার অগ্রযাত্রা ঠেকানোর মূল প্রতিরক্ষা হিসেবে দেখছেন। তিনি আরো বলেছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী স্থায়ী শান্তির জন্য ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা অপরিহার্য, এবং ট্রাম্প এ বিষয়ে ইতিবাচক সংকেত দিয়েছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, ন্যায়সঙ্গত শান্তির জন্য ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে পুতিনও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কথা বলেছেন, যদিও বিদেশি সেনা জড়িত থাকা নিয়ে তিনি আপত্তি জানিয়েছেন।