শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনের নির্দেশদাতাদের বিচার দাবি ডাকসুর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
গুম ও খুনের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা এবং এতে জড়িত সামরিক, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ডাকসু নেতাদের দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
ডাকসুর নেতাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময় ছিল বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামল। সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত গুম, খুন, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। গুম কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতোমধ্যেই ১৮০০-এর অধিক গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক, শিক্ষার্থী, নারী ও শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। শিশুরাও এই নৃশংসতার বাইরে থাকতে পারেনি।
আরো পড়ুন : উপদেষ্টাদের নয়, জাতির সেফ এক্সিট দরকার: আসিফ নজরুল
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষার্থী রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আটক, নির্যাতন ও গুমের শিকার হয়েছেন। অনেকের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধে একটি পার্শ্ববর্তী দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য গভীর হুমকি।
ডাকসু বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই অপরাধের জন্য শুধু শেখ হাসিনা ও তার রাজনৈতিক মহল দায়ী নয়, বরং ডিজিএফআই, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সরাসরি জড়িত ছিলেন। ‘আয়নাঘর’ সহ গোপন বন্দিশালায় পরিচালিত অমানবিক নির্যাতন লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়।
নেতারা জানান, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গুম, গোপন আটক ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে এটি যথেষ্ট নয়। গুম কমিশনের তদন্তকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। চিহ্নিত অপরাধীদের ‘সেইফ এক্সিট’ বা দায়মুক্তি দেওয়ার যে কোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সোচ্চার থাকবে।
নেতারা বলেন, দেশে সত্যিকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারবে না। অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে এই সংস্থাগুলোর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে না বরং গণমুখী ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরো দৃঢ় হবে।