চার দিনে ৪৬ বাংলাদেশি জেলে অপহরণ, আতঙ্কে টেকনাফের জেলেরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪০ এএম

প্রায়ই মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশি জেলেরা আরাকান আর্মির অপহরণের শিকার হচ্ছেন। ছবি : সংগৃহীত
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে টানা ১১ মাস সংঘাতের পর গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি। এরপর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদ ও সাগরে জেলেদের জন্য আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রায়ই মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশি জেলেরা আরাকান আর্মির অপহরণের শিকার হচ্ছেন।
সবশেষ মাত্র ৯ দিনের ব্যবধানে মোট ৫১ বাংলাদেশি জেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে মিয়ানমারে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে গত ১৭ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত চার দিনেই অপহৃত হয়েছেন ৪৬ জন। তবে এখন পর্যন্ত অপহৃতদের কাউকেই ফেরত আনা সম্ভব হয়নি।
সবশেষ ২৬ আগস্ট টেকনাফের নাফ নদের মোহনা থেকে দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় বিদ্রোহী বাহিনীটি। স্থানীয় প্রশাসন ও জেলেদের তথ্যমতে, ১৭ আগস্ট ৫ জন, ২৩ আগস্ট ১২ জন, ২৪ আগস্ট ১৪ জন, ২৫ আগস্ট ৭ জন এবং ২৬ আগস্ট ১৩ জনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরো পড়ুন : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা আজ
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি শাহপরীর দ্বীপের কাছাকাছি নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় স্পিডবোটযোগে অস্ত্র নিয়ে জেলেদের ধাওয়া করে। এতে গত ২৬ আগস্ট একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। তখন কোস্টগার্ড ছয় জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে। তবে নাফ নদের বাংলাদেশ অংশেও হঠাৎ করে ঢুকে জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি, ফলে আতঙ্ক আরো বেড়েছে।
ট্রলার মালিকরা অভিযোগ করেছেন, নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার অংশে আরাকান আর্মির একচ্ছত্র প্রভাব রয়েছে। তারা মাঝে মাঝে অপহৃত জেলেদের ফিরিয়ে দিলেও মাছ ও জাল লুট করে নিয়ে যায়। এতে জেলে পরিবারগুলো দুর্ভোগে পড়েছে, অনেকেই না খেয়ে দিন পার করছেন।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিএন শাকিব মেহবুব বলেন, জেলেদের বারবার সতর্ক করা হলেও তারা জলসীমা অতিক্রম করছেন, তাই এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। ইতোমধ্যে নাফ নদে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং জেলেদের সতর্ক করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ভাটার সময় জেলেদের নাইক্ষ্যংদিয়া হয়ে আসতে গিয়ে মিয়ানমারের জলসীমানা অতিক্রম করতে হচ্ছে। এ সুযোগে আরাকান আর্মি তাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অপহৃত জেলেদের ফেরত আনতে বিজিবি ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে কাজ করছে। পাশাপাশি নাফ নদে টহল ও নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।