১৫ বছরে বিচার ছাড়াই ১৯২৬ জনকে হত্যা!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ এএম
-67298f0225a18.jpg)
বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক নেতা–কর্মীও রয়েছেন। ছবি : সংগৃহীত
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত ১ হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার এই হিসাব বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)। তারা এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে।
আসক-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্লা ২০১৬ সালের ১০ জুলাই পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন। তার পরিবার বলছে, ওই দিন বিকেলে অলিউল্লাহকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা–কর্মী। পরদিন সকালে অলিউল্লাহর মৃত্যুর খবর পায় পরিবার।
পুলিশ তখন দাবি করেছিল, ঘটনার দিন রাত সাড়ে তিনটার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় টহলরত পুলিশ অলিউল্লাহকে থামার সংকেত দেয়। তিনি না থেমে উল্টো পুলিশের দিকে বোমা ও গুলি ছোড়েন। তখন পুলিশের পাল্টা গুলিতে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশের নথিতে এ ঘটনাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ উল্লেখ করে অলিউল্লাহর পরিচয় লেখা হয় ‘সন্ত্রাসী’।
এভাবে মানুষ মারার প্রতিটি ঘটনার পর সরকারের তরফ থেকে প্রায় একই রকম গল্প বলা হয়। এসব যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সেটা শেখ হাসিনা সরকার ও তার প্রশাসন আগাগোড়াই অস্বীকার করে গেছে। তবে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে। এ–সংক্রান্ত তথ্যাদি একটি সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে সম্প্রতি। এতে দেখা যায়, এই সাত বছরেই ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯৩ জন। দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে অনেক রাজনৈতিক নেতা–কর্মীও রয়েছেন।
এসবির হিসাবে সাত বছরে ক্রসফায়ারে নিহতের যে সংখ্যা বলা হয়েছে, আসকের হিসাবে সেই সংখ্যা আরো ১২০ জন বেশি।
প্রতিটি ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ক্রসফায়ারের সাজানো বর্ণনা উল্লেখ করে মামলা দেয়া হয়, তাতে নিহত ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে আরো অনেককে আসামি করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পরিবারগুলো মামলা করার সাহস পেত না। কেউ কেউ আদালতে মামলা করার চেষ্টা করতে গিয়ে হয়রানি ও হুমকি–ধমকির শিকার হয়েছেন।
আরো পড়ুন : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ৫ জনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ