বিপুল অর্থ লুটপাটপকারী আসাদকে খুঁজছে পুলিশ

মারুফ সরকার, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিপুল লুটপাট ও দুর্নীতিতে জড়িত বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ব্রামা) সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানীর বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেছে সংস্থাটি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে আসাদ সংগঠনের চাঁদা আদায় বহি ও বিবিধ আদায় বহি গোপন করে প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া তিনি একটি স্থগিত অডিট ফার্মের মাধ্যমে জাল অডিট রিপোর্ট তৈরি করে তা রেকর্ডে সংযোজন করেন।
ব্রামার অভিযোগ, আসাদের এসব কর্মকাণ্ডে সংগঠনের ভাবমূর্তি ও আর্থিক স্থিতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি, বরং প্রকাশ্যে সংগঠনকে ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছেন।
বনানী থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়েছে, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরো পড়ুন : বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক নয়, নিরপেক্ষ সরকার চায়: আসিফ নজরুল
অভিযোগ রয়েছে, সংগঠন। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন গায়ের জোরে এই সংগঠনের সভাপতির পদ দখল করেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সংগঠনটির ব্যানার এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে এসিতে ব্যবহৃত নিম্নমানের কুলিং গ্যাস আমদানি করে দেশের বাজারে সরবরাহ করেন। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, প্রাণ হারান অনেক মানুষ। অথচ এসব মৃত্যুর ভেতর দিয়েই আসাদ গড়ে তোলেন হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়।
ব্রামার সদস্যরা জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে জাপান থেকে ব্রামার ২২ জন সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে একটি প্রতিনিধি দল ব্রামার হয়ে জাপানে যায়। প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন ব্রামার তৎকালীন সভাপতি আসাদুজ্জামান নিজেও। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ওই দলে এমন দুজনকে যুক্ত করেন যারা কখনও ব্রামার সদস্যই ছিলেন না। সফর শেষে ২০ জন সদস্য দেশে ফিরে এলেও ওই দুইজন আর ফেরেননি।
সূত্র বলছে, আসাদের লুটপাটের চক্র সক্রিয় রয়েছে দেশ বিদেশে। অভিযোগ আছে, একটি ভুয়া প্রজেক্ট দেখে জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউএনডিপি থেকে বিপুল অর্থ নিয়েও আত্মসাৎ করেছেন আসাদ। মানিকগঞ্জে অবস্থিত তথাকথিত সেই প্রতিষ্ঠান ঘুরে উল্লেখ উল্লেখিত সেই প্রজেক্টের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
ইউএনপডিপির সঙ্গেও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ব্রামার সাবেক আসাদুজ্জামান এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।