বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের কারণ জানালেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ এএম
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল। ছবি : সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, সরকার পরিবর্তনের অন্যতম কারণ দুর্বল শাসন কাঠামো বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল।
তিনি বলেন, দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো অনেক সময় একটি দেশের সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের পেছনেও এমন দুর্বল শাসন ব্যবস্থার ভূমিকা ছিল।
শনিবার (১ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তার এই বক্তব্যের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে দোভাল বলেন, রাষ্ট্র গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রাষ্ট্রকে তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে না, বরং সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও ভূমিকা রাখে।
দোভাল বলেন, আজকের প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। কারণ এখন মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে বেশি প্রত্যাশা রাখে। তাই জনগণের সন্তুষ্টিই হতে হবে শাসনের কেন্দ্রবিন্দু।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসন ব্যবস্থায়। সরকার যখন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করে, তখন জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সেই ব্যক্তিরা, যারা এসব প্রতিষ্ঠান তৈরি ও লালন করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসন মডেলের প্রশংসা করে দোভাল বলেন, ভারত এখন এক নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করছে— নতুন শাসন কাঠামো, নতুন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নতুন বৈশ্বিক অবস্থানে। বর্তমান সরকার প্রশাসনিক দুর্নীতি দমনে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এনেছে, তা গভীর প্রভাব ফেলছে। ভবিষ্যতে আরও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, যখন পরিবর্তন আসে, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা। ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও যেন রাষ্ট্র দিক হারিয়ে না ফেলে, ভয় বা বিভ্রান্তিতে যেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যাহত না হয়।
ভালো শাসনের মূল উপাদান হিসেবে নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেন দোভাল। নারীর ক্ষমতায়ন আধুনিক শাসনের অপরিহার্য অংশ। শুধু ভালো আইন বা কাঠামো থাকলেই হবে না, এগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই আসল চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া তিনি প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের ওপরও জোর দেন, বলেন, আমাদের এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে যা শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবার দক্ষতা বাড়ায়। একইসঙ্গে সাইবার হামলার মতো প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি থেকে সমাজকে রক্ষা করাও জরুরি।
