×

আন্তর্জাতিক

বিজ্ঞানীরা

পৃথিবীতে আবারো একটি গণবিলুপ্তি ঘটবে

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫২ পিএম

পৃথিবীতে আবারো একটি গণবিলুপ্তি ঘটবে

ছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞানীরা বলছেন সম্প্রতি পৃথিবীতে আবারো একটি গণবিলুপ্তি ঘটবে। সেই ঘটনায় অন্য প্রাণীর সঙ্গে সব মানুষও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, কবে নাগাদ সেই গণবিলুপ্তি ঘটবে তাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। তাদের বিলুপ্তি ঘটবেই। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো কোনো সময় গণবিলুপ্তি ঘটেছে। যাকে 'মাস এক্সটিঙ্কশন' বলা হয়ে থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহাকাশের গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে বহু প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটালে তাকে 'মাস এক্সটিঙ্কশন' বা গণবিলুপ্তি বলে। সূত্র: ডেইলি মিরর ও সিএনএন। 

পৃথিবীতে এ পর্যন্ত পাঁচবার এরকম বিপর্যয় ঘটেছে যা গ্রাস করেছিলো গোটা প্রাণীকুলকে। এতে অধিকাংশ স্থল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। 

এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গণবিলুপ্তিটি ঘটেছিলো ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে। একটি গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো ডাইনোসর প্রজাতি। পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়ানো এই প্রজাতির বিলুপ্তি নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে বিভিন্ন দেশে। 

কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওটাতেই শেষ নয়, পৃথিবী আরেকটি অর্থাৎ ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির সময় পার করছে। আর এর কারণ কোনো গ্রহাণু নয় বরং মানব সভ্যতা নিজেই। পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংসের মাধ্যমে মানুষ নিজেই বাসযোগ্য এ পৃথিবীকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলছে।

নতুন এক গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের পরিণাম হিসেবে পৃথিবীর পরবর্তী গণবিলুপ্তি ঘটবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এই গণবিলুপ্তি দ্রুততর হবে।

আরো পড়ুন: প্রথমবারের মতো আমেরিকার বাইরের কেউ চাঁদে পা রাখবেন!

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের একদল গবেষক গবেষণাটি চালিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে, একাধিক কম্পিউটার সিমুলেশন বলছে, পৃথিবী একটি গণবিলুপ্তির মুখোমুখি হবে যার ফলে সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

এই গণবিলুপ্তি কবে শুরু হবে সে ব্যাপারে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ কোটি বছরের মধ্যে পৃথিবীতে মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। প্রতিবেদন আরো বলছে, মানুষ যদি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এখনই একেবারে বন্ধ করে দেয় তাহলেও উক্ত সময়ের মধ্যে সেটা ঘটবে।

বিজ্ঞানীদের একটি অংশ বলছেন, পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস তথা বনজঙ্গল উজাড় ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারের মতো কিছু কারণে গ্রিসহাউস গ্যাস বিশেষ করে কার্বন নির্গত হচ্ছে। যার ফলে পৃথিবী ক্রমশ উষ্ণ বা গরম হয়ে উঠছে। যা জলবায়ু পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

মানুষ যদি পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ না করে পৃথিবীর এই উষ্ণায়ন বাড়তেই থাকবে। 

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের গবেষকরা বলছেন, আগামী ২৫ কোটি বছর সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে জীবিত যেকোনো প্রাণিকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ১৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মোকাবিলা করতে হবে।

গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এটা স্পষ্ট যে, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হবে না। ফলে এসব প্রাণী গণহারে মারা পড়বে। যার মধ্যদিয়ে শুরু হবে গণবিলুপ্তি।

আরো পড়ুন: ভরদুপুরে রাতের মতো অন্ধকার নামবে যে ৩ দেশে

নতুন গবেষণাটির নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের স্কুল অফ জিওগ্রাফিক্যাল সায়েন্সেসের সিনিয়র গবেষণা সহযোগী ড. আলেকজান্ডার ফার্নসওয়ার্থ। তিনি বলেছেন, 'দূর ভবিষ্যতের দৃশ্যটা খুব অন্ধকার ও অনিশ্চিতই মনে হচ্ছে। কার্বনের মাত্রা এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ হতে পারে। অন্যান্য অনেক প্রজাতির সঙ্গে মানুষও ওই দাবদাহের সঙ্গে অভিযোজন করতে পারবে না। ফলে তারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়, প্রাণীকুলের বিভিন্ন প্রজাতি তার স্বাভাবিক গতির চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি গতিতে গণবিলুপ্তির পথে হাঁটছে। প্রত্যেক বিলুপ্তির সময় অনেক প্রজাতি হারিয়ে যায় অন্যদিকে কিছু কিছু প্রজাতি টিকে থাকে। মানুষ যদি মনে করে যে হারিয়ে যাওয়ার এই চক্রে শুধু তারাই বেঁচে থাকবে, তবে সেই ধারণা ভুল হবে।

ওই সমীক্ষার সহকারী লেখক জেরার্ডো সেবেলোস বলেন, পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া এই শূন্যস্থান অবশ্যই পূরণ হয়। কিন্তু প্রকৃতির জীববৈচিত্র্যের মধ্যে কারা টিকে থাকবে আর কারাই বা হারিয়ে যাবে তা বলা কষ্টসাধ্য।  

গত বছর প্রায় কাছাকাছি সময়ে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘বায়োলজিক্যাল রিভিউজ’-এ প্রকাশিত পৃথক এক গবেষণায় বলা হয়, পৃথিবীতে ভয়ঙ্কর সর্বনাশের এই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ক্রেটাসিয়াস যুগের পর প্রাণের গণহারে বিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায় শুরু হয়ে গেছে খুব কম করে হলেও ৭০০ বছর আগে তথা ১৫০০ শতক থেকেই।

গবেষণায় আরো বলা হয়, পৃথিবীর চেনা-জানা ২০ লাখ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই এরই মধ্যে গণহারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যেভাবে হারিয়ে গিয়েছিলো ডাইনোসর। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ভোটের দুই মাস আগে তফশিল ঘোষণা হবে : সিইসি

ভোটের দুই মাস আগে তফশিল ঘোষণা হবে : সিইসি

আমরা প্রস্তুত, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানব: ইরানের সেনাপ্রধান

আমরা প্রস্তুত, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানব: ইরানের সেনাপ্রধান

নোয়াখালীতে এনসিপিকে নিয়ে যা বললেন অ্যাডভোকেট শাহীনুর বেগম সাগর

নোয়াখালীতে এনসিপিকে নিয়ে যা বললেন অ্যাডভোকেট শাহীনুর বেগম সাগর

করোনার নতুন ধরনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, প্রয়োজন সতর্কতার

করোনার নতুন ধরনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, প্রয়োজন সতর্কতার

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App