বছরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে: ড. ইউনূস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
বছরটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গণি এবং পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্টগার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করার জন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে সর্বাধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামের সর্বাধিক ব্যবহার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি কমান্ড সেন্টার বা একটি কমান্ড সদরদপ্তর স্থাপন করতে হবে, যেটি পুলিশ ও সব নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করবে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নতুন কমান্ড স্ট্রাকচার দেশের সব সংস্থা, থানা ও সব আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে "দক্ষতার সঙ্গে ও নিবিড়ভাবে" যোগাযোগ স্থাপন করবে।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রধানদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে। এ বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেওয়া উচিত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সহযোগীরা বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সবার উচিত এসব বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা।’
এছাড়া প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা এবং ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে নিরাপত্তা প্রধানদের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে না পারি, তবে বিশ্বব্যাপী আমাদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে আমাদের খুব স্বচ্ছ হতে হবে।’
পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
এসময় পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ ১০টি দল গঠন করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে এই মামলাগুলোর দ্রুত বিচার এবং এ মামলাগুলোতে কোনো নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি করা না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য ইন্টারপোলের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তাদের সাড়া পাব।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করার পর রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা কমেছে। আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।