×

রাজনীতি

এই বাজেট ঋণনির্ভর ও লুটেরাবান্ধব: বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ০৭:১১ পিএম

এই বাজেট ঋণনির্ভর ও লুটেরাবান্ধব: বিএনপি

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

   

আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখান করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, শূন্যের ওপর দাঁড়ানো এই বাজেট কল্পনার ফানুস। কর ও ঋণনির্ভর এই বাজেট লুটেরাবান্ধব। আওয়ামী লীগ নিজেদের চুরি হালাল করার জন্য এই বাজেট প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত এই বাজেট কালো টাকাকে সাদা করার বাজেট। কালো টাকায় ঢালাও দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে বিএনপি।

রবিবার (৯ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। তার সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, ‘কালো টাকায় ঢালাও দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ব্যক্তির সঙ্গে যেকোনো কোম্পানিকেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। সরকারের কোনো সংস্থাই কালো টাকা সাদাকারীদের কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারবে না। অর্থাৎ দায়মুক্তি বা আইনি ছাড় দেয়া হলো। এর ফলে সৎ ও বৈধ আয়ের করদাতাদের নিরুৎসাহিত এবং দুর্নীতিকে সরকারিভাবে উৎসাহিত করা হলো।

আরো পড়ুন:দেশকে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে সরকার

তিনি বলেন, দুর্নীতি করার এহেন লাইসেন্স প্রদান অবৈধ, অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে কর দেয়ার বিধান বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক। এই পদক্ষেপ সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। ইতোমধ্যে বাজেটের প্রস্তাব শুনেই বাজারে মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে। লক্ষ্য করুণ, আইএমএফের পরামর্শ উপেক্ষা করে রাজস্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই বাজেটে কোনো সংস্কার প্রস্তাব আসেনি।

বাজেটে ঋণ করে ঋণ পরিশোধের ফন্দি করা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ ঘাটতি মেটানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ঋণ নিয়ে। সরকার কঠিন শর্তের বৈদেশিক ঋণের দিকে আরো ঝুঁকবে। দেশ আটকা পরবে আরো গভীর ঋণের ফাঁদে। যার বোঝা চাপবে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। বর্তমানে দেশের প্রতিটি নবজাতক শিশুকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্ম নিতে হয়। দেশ দেউলিয়াত্বের দোঁড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রিজার্ভ ও ডলার সংকট বর্তমান অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সংকট। এই সংকট কাটিয়ে ওঠার কোনো রোডম্যাপ বাজেটে নেই। কর্মসংস্থান তৈরির কোনো দিকনির্দেশনা নেই। 

বাজেটকে গণমানুষের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার সঙ্গে নিষ্ঠুর তামাশা দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, অসহনীয় মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা হবে তার কোনো পথনির্দেশনা নেই। সরকারি আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। তাদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাজেটে সে আলোচনা নেই। 

প্রস্তাবিত বাজেটকে কালো টাকা সাদা করার বাজেট উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ায় সৎ ও বৈধ করদাতারা নিরুৎসাহিত এবং দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হয়েছে। দুর্নীতি করার এই লাইসেন্স দেয়া অবৈধ, অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। সরকারের আনুকুল্যে বেড়ে ওঠা আজিজ-বেনজীরদে মতো দুর্নীতিবাজদের কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ সৃষ্টির জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো উন্নয়নের বেলুন ফুটো হয়ে গেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বাজেট শুধু গণবিরোধী না, বাংলাদেশবিরোধী। অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প বন্ধ রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো জনকল্যাণমুখী খাতে ব্যবহার করা যেত। কিন্তু সেটা করলে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে, তাই পুরো বাজেট করা হয়েছে মেগা চুরি ও দুর্নীতির জন্য। 

সরকার বাজেটে জনগণের পকেট কাটার দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের কাছ থেকে কর আদায়ের পরিকল্পনা না করে, যারা নিয়মিত কর দেয় তাদের কাছ থেকে বাড়তি আদায়ে মনোযোগ দেয়া হয়েছে৷ এই বাজেট আওয়ামী লীগ ও তাদের মাফিয়া গুরুদের মধ্যে ভাগাভাগির একটি ইজারাপত্র মাত্র। 

প্রশ্নোত্তর পর্বে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটের দুই-তৃতীয়াংশ যাবে বেতন-ভাতা, প্রণোদনা, ভর্তুকির মতো অনুৎপাদনশীল খাতে। পুলিশ ও প্রশাসনের একমাত্র কাজ বিরোধীদলকে নির্যাতন করার। তাদের খাতেই বেশি খরচ করা হচ্ছে। 

বিএনপির আমলে অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান প্রতি বাজেটের আগে ভিক্ষার থালি নিয়ে ঘুরতেন-আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এবারের বাজেট দেখেই বোঝা যায় কারা ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরছে। পুরো বাজেটই ভিক্ষার, তার মধ্যে নিজস্ব কিছুই নেই। ঘাটতি বাজেট মেটানো হবে ঋণ দিয়ে। একদিকে বৈদেশিক ঋণ, আরেক দিকে অভ্যন্তরীণ ঋণ। দেশের মানুষ ইতেমধ্যে খাদে পড়ে গেছে, তাদের ওপর চেপে বসেছে বাজেটের হাতি। তাদের কাছ থেকেই আরো ঋণ নেয়া হবে।

টাইমলাইন: বাজেট ২০২৪-২৫

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App