মৃত্যু যন্ত্রণা দিচ্ছে ফুসফুসের গুলি, টাকার অভাবে বন্ধ রমজানের চিকিৎসা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
জুলাই অভ্যুত্থানে লক্ষ্মীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়েছেন অনেকেই। তারা সবাই এখনও মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এদের মধ্যে দিনমজুর রমজান আলীও একজন। তার শরীর থেকে কয়েকটি গুলি বের করা হয়েছে। তবে এখনও ফুসফুসে রয়ে গেছে আরো একটি গুলি। একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে পরিবার চালানো। আয় রোজগার নেই। ফলে দু’চোখেই অন্ধকার দেখছেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ বাঞ্চানগর এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী। তিনি গত ২০ বছর ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ মোট ছয় সদস্যের সংসার তার। প্রতিদিন কাজ করলে মিলত ৫/৬শ টাকা। এ দিয়ে কোনরকমে চলত তার সংসার।
গত ৪ আগস্ট সকাল বেলা ঘর থেকে কাজের সন্ধানে বের হন রমজান আলী। আর তখন সারাদেশের মতো লক্ষ্মীপুরেও ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছিল তুঙ্গে। শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় যেতে না যেতেই একের পর এক গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন শিক্ষার্থীদের। পিছু না হটে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেই গুলিবিদ্ধ হন রমজান। দীর্ঘ আড়াই মাস ঢাকায় চিকিৎসার পর শরীর থেকে দুইটি গুলি বের করলেও এখনো ফুসফুসের পাশে রয়েছে আরো একটি গুলি। ফুসফুসে গুলি থাকায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও কাজকর্ম করতে পারছেন না তিনি। আর কাজকর্ম করতে না পারায় তীব্র আর্থিক সংকটে ভুগছেন রমজান। তার চিকিৎসায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছে পরিবার ও এলাকাবাসী।
এদিকে রমজানকে গুলি করা সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন টিপুসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশ সুপার আকতার হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সেখানে ২৫৯ জন আহত এবং ১৬ জন শহিদ রয়েছে। এদের মধ্যে চারজন ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর শহরে ও ১২ জন ঢাকায় শহিদ হন। তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেছেন, হতাহতের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আহতদের দেশে ও বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষর্থীদের শাক্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তীতে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান দমনে গণহত্যার অভিযোগে বিচারকাজ চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে বিচাররে মুখোমুখি করতে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন করেছে বাংলাদেশ।