সাংবাদিক রাহানুমা সারাহর বিয়ে নিয়ে রহস্য

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২১ পিএম

নিহত সাংবাদিক রাহানুমা সারাহ।
রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল জিটিভির সাংবাদিক রাহানুমা সারাহর (৩২) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার মৃত্যুর বিষয়টি দেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা— এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনো মেলেনি। পুলিশ বলছে, লাশের ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যু রহস্য।
এদিকে রাহানুমার বিয়ের বিষয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। গণমাধ্যমের খবরে রাহানুমা সারাহ বিয়ে করেছেন বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু তার বড়বোন রাবিতা সারাহ দাবি করেছেন, বিয়ের বিষয়ে সে ও পরিবারের কেউ কিছু জানে না। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস রাহানুমার বিয়ের তথ্য মিথ্যা। পরবর্তীতে আমরা এ ব্যাপারটা জানার চেষ্টা করে দেখব।
আরো পড়ুন : সাংবাদিক রাহানুমার সুরতহাল প্রতিবেদনে যা জানা গেলো
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাহানুমা সারাহর স্বামীর নাম সায়ীদ শুভ্র। গণমাধ্যমকে শুভ্র জানান, সম্পর্কের মাধ্যমে সাত বছর আগে আমরা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করি। মঙ্গলবার সারাহ অফিসে গিয়ে রাতে আর বাসায় ফেরেনি। এক ব্যক্তিকে দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসা ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমি তাকে ফোন করে বলি, রাতে তো তুমি বাসায় আসতে। তাহলে অন্যকে দিয়ে কেন টাকা পাঠিয়ে দিয়েছ? তখন সে ‘আমি ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন রেখে দেয়। পরে রাত তিনটার দিকে খবর পাই সে হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে। পরে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো ঝগড়াও হয়নি। তবে, বেশ কিছুদিন থেকে আমার স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। ভাবছিলাম আমরা দুজনই কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে আসব। দেশের এই পরিস্থিতিতে আর কাজী অফিসে যাওয়া হয়নি।
সারাহ জিটিভির নিউজরুম এডিটর হিসেবে কাজ করতেন। অনেকের প্রশ্ন, সারাহ রাহানুমা আত্মহত্যা করলে, কেন করেছেন? বা তাকে কেউ হত্যা করলেও কেন করা হয়েছে?
সারাহ কল্যাণপুরে থাকতেন বলে জানা গেছে। সারাহ নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার ইসলামবাগ কৃষ্ণপুর গ্রামের বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে। মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফেসবুকে লেখেন, ‘জীবন্মৃত (বেঁচে থেকেও মৃতপ্রায়) হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।’
বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢামেক মর্গে রাহানুমা সারাহর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এরপর তার পরিবার মরদেহ নিয়ে যায়। মরদেহ নেয়ার সময় তার বড় বোন রাবিতা সারাহ বলেন, আমরা মরদেহ নিয়ে মোহাম্মদপুর যাব, সেখানে জানাজা পড়াব। তারপর আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করব।