×

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউএইচও ত্যাগ: বাংলাদেশের জন্য সংকেত ও ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ

রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে

রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৩ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউএইচও ত্যাগ: বাংলাদেশের জন্য সংকেত ও ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ

ডোনাল ট্রাম্প বাংলাদেশের জন্য সংকেত ও ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ

   

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপ গোটা বিশ্ব, বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে গভীর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বহন করে। ভবিষ্যতে আমাদের কী করণীয়, তা এখনই বিশ্লেষণ করা জরুরি।

বাংলাদেশের জন্য সংকেত

১. গ্লোবাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সংকট:

যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া ডব্লিউএইচও-এর কার্যক্রমে আর্থিক সংকট সৃষ্টি করবে। এর প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উপর পড়বে, যারা ভ্যাকসিন কর্মসূচি এবং রোগ প্রতিরোধে WHO-এর সহায়তা পেয়ে থাকে।

২. ভবিষ্যৎ মহামারির প্রস্তুতি দুর্বল হওয়া:

ডব্লিউএইচও-এর তহবিল সংকট মানে বৈশ্বিক রোগপ্রতিরোধ উদ্যোগ দুর্বল হওয়া। বাংলাদেশের মতো দেশ, যেখানে জনসংখ্যা ঘনত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মহামারির ঝুঁকি বেশি, তাদের প্রস্তুতি ব্যাহত হতে পারে।

৩. বিশ্ব স্বাস্থ্য সহযোগিতা হ্রাস:

মহামারির মতো সমস্যায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বই সমাধান। যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া এই সহযোগিতার ভিত্তিকেই দুর্বল করবে, যার প্রভাব বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের উপর পড়বে।

বাংলাদেশের নাগরিকদের ভূমিকা এবং করণীয়

ডব্লিউএইচও-এর বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শত শত বাংলাদেশি চিকিৎসক, গবেষক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আছেন। তাদের অর্জিত দক্ষতা জাতীয় পর্যায়ে কাজে লাগানো অত্যন্ত জরুরি।

•    কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা: সরকার এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে হবে। তারা রোগপ্রতিরোধ, মহামারি নিয়ন্ত্রণ, এবং নতুন ভ্যাকসিন তৈরিতে নেতৃত্ব দিতে পারেন।

•    দায়িত্বের সুনির্দিষ্টতা: এই বিশেষজ্ঞদের জন্য স্পষ্ট দায়িত্ব নির্ধারণ এবং তাদের অভিজ্ঞতাকে স্থানীয় চাহিদার সাথে মিলিয়ে কাজে লাগাতে হবে।

প্রশ্ন রয়ে যায়, তারা এতদিন দেশের জন্য কী করেছেন? ভবিষ্যতে তাদের কর্মদক্ষতা কীভাবে জনস্বার্থে আরও কার্যকর হতে পারে? এর উত্তর সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিহিত।

কীভাবে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে

১. স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন:

•    বাজেট বৃদ্ধি: স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও স্থায়ী তহবিল তৈরি।

•    গবেষণা ও উন্নয়ন: নিজস্ব সক্ষমতায় ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ।

২. বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব:

WHO ছাড়াও GAVI এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে সহযোগিতা জোরদার করা।

৩. মহামারির জন্য প্রস্তুতি:

জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ পরিকল্পনা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

কোন পৃথিবীতে আমরা বাস করছি এবং কীভাবে বাস করতে চাই?

আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে বৈশ্বিক সহমর্মিতা অনেক সময় রাজনৈতিক স্বার্থের কাছে হার মানে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি, প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, এবং কর্মীদের মধ্যে ডেডিকেশনের অভাব উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।

কিন্তু আমরা কীভাবে এই চিত্র বদলাতে চাই?

•    দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন: শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি কার্যকর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

•    প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি: কর্মীদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ, তদারকি, এবং পারফরম্যান্স মূল্যায়ন চালু করা।

•    সার্বিক উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা: সরকার, জনগণ এবং বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে একটি কার্যকর উদ্যোগ।

•    শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ: এগুলোতে অগ্রাধিকার দিয়ে কর্মসংস্থান ও দক্ষ কর্মী তৈরি করা।

আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে বৈষম্য নেই, দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন আছে, এবং প্রতিটি নাগরিকের উন্নয়নের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। এটি সম্ভব শুধুমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টা, দায়িত্ববোধ, এবং সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে। আপনার মতামত কী? বাংলাদেশ এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবে?

রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন, [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App