অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে কঠিন শর্ত দিলো সরকার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:১৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দেশে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে শর্ত আরো কঠোর করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, পিস্তল, রিভলবার বা রাইফেলের লাইসেন্স পেতে হলে টানা তিন অর্থবছর বছরে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা করে আয়কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক তিন অর্থবছরে বছরে দুই লাখ টাকা।
১০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা’ সংশোধন করে নতুন নির্দেশনা জারি করে। ২০১৬ সালের আগের নীতিমালায় পিস্তল, রিভলবার, রাইফেল লাইসেন্সের জন্য তিন বছর আয়কর শর্ত ছিল বছরে তিন লাখ টাকা, শটগানের জন্য এক লাখ টাকা।
নীতিমালা অনুযায়ী, সনদপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক পদে কর্মরত ব্যক্তি, জাতীয় বেতন স্কেলের ষষ্ঠ ও তদূর্ধ্ব গ্রেডে চাকরিরত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে পিস্তল, রিভলবার, শটগান ও রাইফেলের লাইসেন্স ফি এবং নবায়ন ফি প্রযোজ্য হবে না।
আরো পড়ুন : যুক্তরাজ্যে ঢাকার ধনকুবেরদের গোপন সম্পত্তি বেচাকেনা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া কঠিন করতে ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে। নতুন নীতিমালা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্যক্তি পর্যায়ে পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স ইস্যু ফি বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগে যা ছিল ৩০ হাজার টাকা। বন্দুক, শটগান ও রাইফেলের লাইসেন্স ইস্যু ফি এখন ৪০ হাজার টাকা। আগে ছিল ২০ হাজার টাকা। পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স নবায়ন ফি দিতে হবে ২০ হাজার টাকা। আগে ছিল ১০ হাজার টাকা। বন্দুক, শটগান ও রাইফেলের নবায়ন ফি বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। যা আগে ছিল ৫ হাজার টাকা।
অস্ত্র ডিলার বা মেরামত প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ফিও ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ইস্যু ফি এখন ৫০ হাজার টাকা, আগে যা ছিল ২০ হাজার। অন্য প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ফি দ্বিগুণ হয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে।
বিদেশে থাকা কোনো বাংলাদেশি বা দ্বৈত নাগরিক আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইলে তিন বছর ধারাবাহিকভাবে বছরে ১২ লাখ টাকা রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং বিদেশের আয়করের প্রমাণ দেখাতে হবে।
কিছু পেশার মানুষ বিশেষ প্রাধিকার হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাবেন। তাঁদের জন্য আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতা নেই। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার মেয়র, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সামরিক বাহিনীর কমিশন্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, গবেষণা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে জাতীয় স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি কোনো অবস্থাতেই অস্ত্রের লাইসেন্স পাবেন না। কোনো ব্যক্তি আদালতের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত হলে শাস্তি শেষ হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।